অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : বরিশালের মোকামগুলোতে আসতে শুরু করেছে সাগরের ইলিশ। ফলে কিছুটা দাম কমতে শুরু করেছে। শনিবার সকালে বরিশালের খুচরা বাজারে পাঁচশ’ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে নয়শ’ টাকা কেজি দরে। এই সাইজের ইলিশের দাম কয়েকদিন আগেও ছিলো ১২শ’ টাকা কেজি।
আড়ৎদাররা জানিয়েছেন, নদীতে মাছ নেই। সাগরের ইলিশ কিছুটা আসতে শুরু করেছে। ফলে সামান্য কিছু দাম কমেছে।
আড়ৎদার জহির সিকদার বলেন, শনিবার ভোরে কয়েকটি মাছের ট্রলার এসেছে নগরীর পোর্ট রোড বাজারে। সবমিলিয়ে প্রায় পাঁচশ’ মন সাগরের ইলিশ এসেছে। গেল বছর এই সিজনে যেখানে তিন থেকে পাঁচ হাজার মন ইলিশ বিক্রি হয়েছে পোর্ট রোড বাজারে।
বরিশালের শায়েস্তাবাদ এলাকার বাসিন্দা জেলে রুহুল আমিন জানান, নদীতে তীব্র স্রোত চলছে। তাই নদীতে ইলিশ মিলছে না। নদীতে মাছ না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন বরিশালের জেলে পরিবারের সদস্যরা।
জেলে খোরশেদ মুন্সি বলেন, নদীতে ইলিশ না থাকার অন্যতম কারণ হচ্ছে- চলতি বছর নিষেধাজ্ঞা চলাকালে প্রচুর জাটকা নিধন হয়েছে।
বরিশাল নগরীর ইলিশের মোকামখ্যাত পোর্ট রোড বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সাগরের ইলিশ কেনাবেচা হচ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে মোকামের একাধিক ব্যবসায়ীরা বলেন, পোর্ট রোড বাজারে ইলিশ নিয়ে সিন্ডিকেট হয়। যে কারণে বড় বড় জেলে নৌকা এখন আর এখানে আসে না।
বরিশালের মোকামে ইলিশ কম আসার সত্যতা স্বীকার করে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিমল চন্দ্র দাস বলেন, যা আছে তার আকৃতি খুবই সুন্দর ও বড় জাতের। প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে জেলেরা সাগরে যেতে পারছেন না। তাই এ অঞ্চলে মাছ কিছুটা কম। পানি নামার যে ঢল তা ইলিশের জন্য উজান ঠেলার উপযোগী নয়।
তবে মনপুরা, কক্সবাজার এলাকায় প্রচুর ইলিশ ধরা পরছে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকার জেলেদের জালে ধরাপরা ইলিশ পূর্বে বরিশালের বিভিন্ন মোকামে আমদানি করা হতো। এখন পদ্মা ও পায়রা সেতুর সুফলের কারণে অনেকস্থানেই সড়ক যোগাযোগ সহজ হয়েছে।
বরিশাল বিভাগের গলাচিপা, বামনা, পাথরঘাটা অঞ্চলের জেলেরা এখন আর বরিশাল নির্ভর নয়। তারা সরাসরি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ট্রাক ভর্তি করে ইলিশ পাঠাচ্ছেন। কিংবা সহজে বড় আড়ৎদারদের ঘাটেই পেয়ে যাচ্ছেন। ফলে ইলিশের দেশ বরিশালেই এখন ইলিশ সংকট দেখা দিয়েছে।
Leave a Reply